ফেমডম সেশনের আড়ালে নির্যাতনের অভিযোগে দুই নারীকে আটক করা হয়েছে

ফেমডম সেশনের আড়ালে নির্যাতনের অভিযোগে  ঢাকায় দুই নারীকে আটক করা হয়েছে

ছবিঃ রাজধানী বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে ফেমডম (নারী নেতৃত্বাধীন যৌনসম্পর্ক) সেশনের   নামে নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি প্রচারের অভিযোগে দুই নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শিখা আক্তার (২৫) ও সুইটি আক্তার জারা (২৫)।
বৃহস্পতিবার (১ মে) ভোরে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জি-ব্লকের একটি বাসায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।এসময় বিকৃত যৌন কাজে ব্যবহৃত একটি চাবুক, পরিধেয় বিশেষ পোশাক, হাই হিল, বুট জুতা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)
ডিএমপি জানিয়েছে, গত ২৯ এপ্রিল মো. আব্দুল্লাহ এক ব্যক্তি ফেসবুকের মাধ্যমে একটি অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করেন। সেখানে পুরুষদের উলঙ্গ করে শারীরিক নির্যাতন ও বিকৃত যৌনাচারের ভিডিও প্রচার করা হয়। এই কার্যকলাপে জড়িত ব্যক্তিরা টেলিগ্রাম ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে এসব ভিডিও ছড়িয়ে দেয়। জড়িত নারীরা নিজেদের “মিসট্রেস” হিসেবে পরিচয় দেন এবং পুরুষরা টাকার বিনিময়ে তাদের কাছে নির্যাতিত হতে আগ্রহী হন, যা “ফেমডম সেশন” নামে পরিচিত।
আব্দুল্লাহ নামে একজন ব্যক্তি ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে শিখা আক্তার নামে এক নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তার দেওয়া বিকাশ নম্বরে ৫০০ টাকা পাঠান। এরপর তাকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসায় যেতে বলা হয়। ৩০ এপ্রিল তিনি সেখানে গেলে দেখতে পান, শিখা আক্তার, সুইটি আক্তার এবং আরও কয়েকজন মিলে এক ব্যক্তিকে উলঙ্গ করে শারীরিকভাবে নির্যাতন করছেন এবং সেই দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করছেন। ঘটনার পর আব্দুল্লাহ ভাটারা থানায় একটি মামলা করেন, যার ভিত্তিতে পুলিশ ওই দুই নারীকে গ্রেপ্তার করে।
ফেমডম / BDSM নিজেই একটি যৌন অভ্যাসের অংশ, যেখানে পারস্পরিক সম্মতি, নিরাপত্তা, এবং সীমার প্রতি শ্রদ্ধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফেমডম বলতে যদি আপনি বোঝাতে চান এটি কি স্বাভাবিক, তাহলে হ্যাঁ — যতক্ষণ পর্যন্ত এটি দুই বা একাধিক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের পারস্পরিক সম্মতিতে হয় এবং কারো শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি না হয়, ততক্ষণ BDSM একটি বৈধ এবং স্বীকৃত যৌন অভ্যাস হিসেবে বিবেচিত।
তবে ফেমডম বা BDSM-এর নামে যদি কারো উপর জোর করে বা সম্মতি ছাড়া নির্যাতন চালানো হয়, সেটি অপরাধ। Consent (সম্মতি) না থাকলে তা আর BDSM থাকে না, তা হয় নিছক নির্যাতন।

বিশ্বের  যেসব দেশে BDSM ও Femdom সম্মতিসহ বৈধ ও সহনীয়:
চেক প্রজাতন্ত্র (Czech Republic / চেকিয়া) – প্রাগ শহর বিশ্বব্যাপী BDSM সংস্কৃতির জন্য পরিচিত; সম্মতিসহ কার্যকলাপ বৈধ।
জার্মানি – ইউরোপের অন্যতম BDSM-বান্ধব দেশ, বড় BDSM ইভেন্ট ও পার্টি হয়।
নেদারল্যান্ডস – অত্যন্ত উদার যৌন সংস্কৃতি; BDSM কার্যকলাপ বৈধ ও সামাজিকভাবে গৃহীত।
যুক্তরাজ্য (UK) – সম্মতির ভিত্তিতে বৈধ; তবে গুরুতর শারীরিক আঘাত আইনের আওতায় আসতে পারে।
ফ্রান্স – যৌন স্বাধীনতায় বিশ্বাসী সমাজ; BDSM কার্যক্রম সম্মতির ভিত্তিতে বৈধ।
স্পেন – সামাজিকভাবে সহনশীল এবং আইনি বৈধতা রয়েছে।
ইতালি – সম্মতিসহ ব্যক্তিগত BDSM বৈধ; তবে জনসমক্ষে নয়।
সুইডেন – উদার নীতিনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি; BDSM বৈধ।
পোল্যান্ড – সামাজিকভাবে রক্ষণশীল হলেও ব্যক্তিগত সম্মতিসহ BDSM বৈধ।
নরওয়ে, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড – নর্ডিক দেশগুলো BDSM কার্যক্রম বৈধ ও নিরাপদ।
সুইজারল্যান্ড – সম্মতিসহ বৈধ এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বেশি রক্ষা পায়।
বেলজিয়াম – সম্মতির ভিত্তিতে বৈধ, অনেক ফেটিশ ক্লাব আছে।
আয়ারল্যান্ড – সম্মতিসহ বৈধ, তবে তুলনামূলক ছোট কমিউনিটি।
হাঙ্গেরি – ব্যক্তিগত সীমার মধ্যে সম্মতিসহ বৈধ।
সার্বিয়া – সম্মতিসহ বৈধ; কমিউনিটি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ক্রোয়েশিয়া – ব্যক্তিগত সম্মতিসহ বৈধ।
বুলগেরিয়া – সামাজিকভাবে কিছুটা সংরক্ষণশীল হলেও ব্যক্তিগত BDSM সম্মতিসহ চলে।
লিথুয়ানিয়া – সম্মতিসহ ব্যক্তিগত BDSM বৈধ।
ইসল্যান্ড – যৌন স্বাধীনতা বেশি, BDSM সম্মতিসহ বৈধ।
অস্ট্রিয়া – সম্মতিসহ বৈধ ও সামাজিকভাবে গৃহীত।
যুক্তরাষ্ট্র (USA) – বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যে BDSM সম্মতিসহ বৈধ, তবে গুরুতর আঘাত বা জনসম্মুখে প্রদর্শন আইনের বাইরে পড়ে যেতে পারে।
কানাডা – সম্মতিসহ BDSM বৈধ এবং kink কমিউনিটি সক্রিয়।
ব্রাজিল – BDSM সংস্কৃতি জনপ্রিয় ও বৈধ; ফেটিশ ইভেন্টও হয়।
আর্জেন্টিনা – সামাজিকভাবে উন্মুক্ত ও BDSM সম্মতিসহ বৈধ।
চিলি – সম্মতির ভিত্তিতে বৈধ।
জাপান – BDSM ও শিবারি (রশি-বাঁধা ফেটিশ) সংস্কৃতি রয়েছে; সম্মতিসহ বৈধ।
থাইল্যান্ড – ব্যক্তিগতভাবে BDSM বৈধ, তবে জনসমক্ষে নয়।
দক্ষিণ কোরিয়া – ব্যক্তিগত BDSM বৈধ, তবে প্রকাশ্যে করলে সামাজিক সমস্যা হতে পারে।
ভারত – আইনগতভাবে বৈধ, তবে সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে এখনো সংবেদনশীল।
তাইওয়ান, ফিলিপাইন – সম্মতিসহ ব্যক্তিগত BDSM বৈধ।
অস্ট্রেলিয়া – BDSM বৈধ; kink কমিউনিটি সক্রিয় ও সাংগঠনিক।

                                                          
নিউজিল্যান্ড – নিরাপত্তা ও সম্মতি থাকলে BDSM বৈধ।
মেক্সিকো – সম্মতিসহ বৈধ; কিছু বড় শহরে ফেটিশ কমিউনিটি আছে।
কিউবা – সামাজিকভাবে কিছুটা সংরক্ষণশীল হলেও ব্যক্তিগত সম্মতিসহ বৈধ।
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল:
সিঙ্গাপুর – কঠোর আইন থাকলেও ব্যক্তিগত সম্মতিসহ গোপনীয় BDSM সম্ভব।
মালয়েশিয়া – আইনি সীমাবদ্ধতা আছে, তবে গোপনভাবে সম্মতিসহ BDSM হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকা – সম্মতিসহ বৈধ এবং সক্রিয় BDSM কমিউনিটি আছে।
দক্ষিণ আমেরিকা:
উরুগুয়ে – সম্মতিসহ বৈধ এবং সামাজিকভাবে সহনীয়।
পেরু – সম্মতিসহ বৈধ, কমিউনিটি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নেপাল – সামাজিক ট্যাবু থাকলেও সম্মতিসহ ব্যক্তিগত BDSM চলে।
মঙ্গোলিয়া – ব্যক্তিগত সম্মতিসহ চলে।
পাপুয়া নিউ গিনি – আইনি অবস্থা অস্পষ্ট, তবে গোপনে কিছু কমিউনিটি রয়েছে।
ফিজি – সম্মতিসহ BDSM গোপনে চলে।
দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকা:
ভেনেজুয়েলা – সম্মতিসহ গোপনে BDSM চলে।
কলম্বিয়া – কিছু বড় শহরে কমিউনিটি সক্রিয়।
নাইজেরিয়া – আইনি সীমাবদ্ধতা থাকলেও ব্যক্তিগত সম্মতিসহ কিছু গোপন BDSM কমিউনিটি রয়েছে।
ঘানা – গোপনে সম্মতিসহ BDSM চলে, তবে আইনি অবস্থা স্পষ্ট নয়।
কেনিয়া – সম্মতিসহ ব্যক্তিগত BDSM কার্যক্রম হয়।বার্লিন, জার্মানি ইউরোপের অন্যতম বড় BDSM কমিউনিটি। অনেক ক্লাব, ইভেন্ট আর ফেটিশ পার্টি হয় এখানে।
প্রাগ, চেক প্রজাতন্ত্রপ্রাগ শহর রোমান্টিকতার পাশাপাশি BDSM সংস্কৃতিতেও পরিচিত। সম্মতিসহ খেলাধুলায় সক্রিয় কমিউনিটি।আমস্টারডাম, নেদারল্যান্ডস
যৌন স্বাধীনতার জন্য বিশ্বখ্যাত। এখানে ফেটিশ ও BDSM বিষয়ক অনেক প্রতিষ্ঠান ও পার্টি আছে।
লন্ডন, যুক্তরাজ্যবড় শহর হওয়ায় বৈচিত্র্যময় BDSM গ্রুপ ও ইভেন্ট থাকে।নিউইয়র্ক, USA
কিউট (queer) ও BDSM কমিউনিটি খুব সক্রিয়। নানা রকম ফেটিশ পার্টি হয়।টোকিও, জাপান সিডনি, অস্ট্রেলিয়া
শিবারি (রশি বাঁধার) ফেটিশ ও BDSM অনেক জনপ্রিয়।

যেসব দেশে BDSM বা Femdom ঝুঁকিপূর্ণ বা অবৈধ:
বাংলাদেশ, পাকিস্তান – সরাসরি নিষিদ্ধ না হলেও সামাজিকভাবে কঠোরভাবে ট্যাবু; আইনি সুরক্ষা নেই, ঝুঁকিপূর্ণ।
সৌদি আরব, ইরান, ইউএই, কুয়েত – কঠোর শরিয়া আইন; BDSM ও অন্য যেকোনো বিকল্প যৌনতা সম্পূর্ণ অবৈধ ও শাস্তিযোগ্য।
রাশিয়া – ব্যক্তিগতভাবে বৈধ হলেও যৌন স্বাধীনতার ওপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ কঠোর।
চীন – প্রযুক্তিগত নজরদারি বেশি, BDSM ব্যক্তিগতভাবে সম্ভব হলেও প্রকাশ্যে ঝুঁকিপূর্ণ।

রোমানিয়ায় Femdom হয় – সংক্ষেপে:
আইনি দিক: সম্মতিসহ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে Femdom ও BDSM কার্যকলাপ বৈধ।
বাস্তব চর্চা: বুখারেস্ট ও কয়েকটি শহরে Domme (মহিলা ডমিনেট্রিক্স) এবং সাবমিসিভদের নিয়ে কার্যক্রম হয়।
Fetish Club ও প্রাইভেট Dungeon-এ Femdom সেশন হয়। কমিউনিটি: অনলাইন ও অফলাইনে ছোট কিন্তু সক্রিয় Femdom কমিউনিটি রয়েছে। ইভেন্ট মাঝে মাঝে Femdom Night, Mistress Meetup বা BDSM Summit অনুষ্ঠিত হয়।
রোমানিয়াতে ফেমডম সামিট সেলিব্রেশন

রোমানিয়ায় Femdom Summit ও BDSM ইভেন্ট: বুখারেস্ট শহরে মাঝে মাঝে Femdom Nights, Mistress Meetups, এবং ছোট পরিসরের BDSM conferences আয়োজন করা হয়। রোমানিয়ার কিছু Fetish Club এবং BDSM Community যৌথভাবে Femdom-themed events আয়োজন করে, যেখানে ডমিনেট্রিক্স, সাবমিসিভ ও উৎসুক ব্যক্তিরা অংশ নেন।
এ ধরনের ইভেন্টে থাকে: লাইভ ডেমনস্ট্রেশন ডমিনেট্রিক্সদের ওয়ার্কশপ নেটওয়ার্কিং ফেটিশ ফ্যাশনঅনলাইন RSVP ও ইনভাইটেশন-এর মাধ্যমে অংশ নিতে হয়। কমিউনিটি সাধারণত প্রাইভেট এবং নিরাপদ পরিবেশে এসব আয়োজন করে।
গ্রিসে ফেম্ডম গালা সেলনব্রেসশন 

গ্রিসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ব্যতিক্রমী "ফেমডম গালা ২০২৫" – আধিপত্যের এক অনন্য উৎসব!এথেন্স, গ্রিস:এথেন্সে এখন চলছে এক ব্যতিক্রমধর্মী ও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা ইভেন্ট — "ফেমডম গালা ২০২৫"। আধিপত্য, নিয়ন্ত্রণ ও সীমানার খেলায় আগ্রহীদের জন্য এটি এক অভিজাত, বেসরকারি ও সুশৃঙ্খল গালা হয়ে উঠেছে, যেখানে অংশ নিচ্ছেন বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আসা Dominant নারীরা এবং তাদের Submissive সঙ্গীরা। Femdom Gala-তে নারীরা আধিপত্য দেখান, আর submissive অংশগ্রহণকারীরা আজ্ঞাবহ ভূমিকা পালন করেন। এখানে Dominant নারীরা কালো লেদার বা লেটেক্স পোশাকে থাকেন, আর submissive-রা চেইন, কলার, বা মাস্ক পরে হাজির হন। গালায় লাইভ রোল-প্লে হয়—কেউ মাটিতে বসে থাকে, কেউ পা চাটে (foot worship), আবার কেউ human footstool হয়ে Dominant নারীর পায়ের নিচে মাথা রাখে। সবকিছু হয় সম্পূর্ণ সম্মতিপূর্ণভাবে, সেফ ওয়ার্ড এবং নিয়ম মেনে। এছাড়াও BDSM সম্পর্ক, সম্মতি ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা ও ওয়ার্কশপ হয়। এই গালার মূল লক্ষ্য হলো আধিপত্য-ভিত্তিক সম্পর্ককে সম্মান দেওয়া এবং নারীর নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতাকে উদযাপন করা।

সতর্কতা:
যেখানে আইনি বা সামাজিক অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ, সেখানে সম্মতি থাকা সত্ত্বেও সতর্ক হওয়া উচিত। যেমন অনেক এশিয়ান ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশেই কঠোর আইন ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি আছে।




Post a Comment

Previous Post Next Post